সিলেটের বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের পরিত্যক্ত ১ নম্বর কূপ খনন করে গ্যাসের মজুত পেয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে এই কূপে গ্যাসের মজুত থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত হয় বাপেক্স জানায়, শিগগিরই এ কূপ থেকে উত্তোলন শুরু হবে। প্রতিদিন এই কূপ থেকে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাপেক্সের ভূ-তাত্ত্বিক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন জানান, কূপটিতে কী পরিমাণ গ্যাস মজুত আছে তা পুরোপুরি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
তবে আশা করা যাচ্ছে, দৈনিক ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, সিলেট গ্যাস ফিল্ডের অধীন বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রে দুটি কূপ রয়েছে। এর মধ্যে ১ নম্বর কূপ থেকে ১৯৯৯ সালে উৎপাদন শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। ফের ২০১৬ সালের শুরুতে উৎপাদন শুরু হয়ে আবার ওই বছরের শেষ দিকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা এই কূপে আবারও খননকাজ শুরু হয়।
খনন কাজের শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল, এই কূপ থেকে প্রতিদিন ৭ মিলিয়ন বা ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস মিলতে পারে। তবে খনন শেষে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ কূপ থেকে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘আরও কিছু কার্যক্রম শেষে শিগগিরই আমরা এ কূপ থেকে উৎপাদন শুরু করতে পারবো। খনন শুরুর আগে ডিপিপিতে ধরা হয়েছিল এখানে প্রতিদিন ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মিলতে পারে। তবে এখন মনে হচ্ছে আরও বেশিই পাওয়া যাবে।
তিনি জানান, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) অধীন বিয়ানীবাজারের কূপ ছাড়াও গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা-৮ ও গোয়াইনঘাট-১০ নম্বর কূপ খনন এবং রশিদপুরে একটি পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের কাজ শেষে এসজিএফএলের গ্যাস উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া দুটি প্রকল্পের আওতায় বিয়ানীবাজার ফিল্ড এবং ব্লক-১৩ ও ১৪-এর আওতায় ডুপিটিলা, বাতচিয়া, হারারগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও সিলেট সাউথে ত্রিমাত্রিস সিসমিক জরিপ কাজ সম্পন্নের পথে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের অধীনে আরও কূপ খননের কাজ চলছে জানিয়ে এই প্রকৌশলী বলেন, ‘এতে ২০২৩ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। সব প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ২০২৫ সালের মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড থেকে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ১৬৪ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি পাওয়ার আশা রয়েছে। ’
গ্যাসের জন্য খ্যাতি রয়েছে সিলেটের। ১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান মেলে। এরপর আবিষ্কৃত হয় আরও বেশ কিছু গ্যাসক্ষেত্র।
দেশে বর্তমানে ২৮টি আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। এসব গ্যাসক্ষেত্রে মজুতের পরিমাণ ২১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন বর্গফুট (টিসিএফ)। সম্ভাব্য মজুত রয়েছে আরও ৬ টিসিএফ।